ভালবাসার গল্প, মায়া ! পর্ব-৯
গল্পঃ মায়া, পর্ব- ৯
আজ রহমত আলী দোকানে গিয়ে অবাক হলো, তার দোকান পাট ওলট পালট, দোকানের কেশ ভাঙ্গা, প্রায় সত্তর হাজার টাকা নিয়ে গেছে। দোকানের অনেক দামী পোডাক্ট নাই, তাই সে মাথায় হাত দিয়ে বসে পড়লো। খুব দুঃখ পেলো !
রহমত আলী নিজেকে নিঃস্ব ভাবছে। আরো ভাবছে, এতো কষ্টের দোকান কেন চোরে লুটে নিলো !
চারদিক হতে লোকজন আসতে লাগলো, রহমত হতভম্ব হয়ে বসে আছে। আর কিছু মানুষ সহানুভূতি দেখাতে এসে বাকিটুকুও কেড়ে নিচ্ছিলো।
রহমত আলী হতাশ হয়ে দোকান বন্ধ করে বাড়িতে ফিরে পরিবারের সবাকে ডাকতে লাগল !
-রাহুল, সিয়াম, রুমাত দোকানতো চুরি হয়ে গেলো, এখন আমাদের কি হবে, রাহুলের মা !
রাহুল আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করলো, ইয়া আল্লাহ তুমি দয়া করো, দয়া করো বলে দু’চোখ ভিজিয়ে ফেলছিল !
আজ দুদিন রাহুল ভার্সিটিতে যায়না, তাই রাহুলের বন্ধু আদনান এলো খোঁজ নিতে। এসে দেখলো রাহুল বসে বসে একটি পত্রিকা পড়ছে, তা-ও আবার চাকরির খবর ।
আদনান বললো,- কিরে! তুই দুইদিন ক্যম্পাসে আসিসনা, কি হয়েছে তোর?রাহুলঃ কিচ্ছুনা, বস তো আগে, পরে কথা বলবো।
আদনানঃ কিরে চাকরির খবরে কি দেখছিস! চাকরী বাকরী করবি নাকি? রাহুলঃ দেখি কি করা যায় !
রাহুলের মা রহিমা খাতুন সামনে আসাতে আদনান, আসসালামু আলাইকুম চাচি আম্মা।
-ওয়ালাইকুমুস সালাম বাবা , বসো ।- বলে রাহুলের মা ভেতরে চলে গেলেন।
রাহুল আর আদনান বাসা হতে বের হয়ে সোজা কমলাপুর রেল স্টেশনে এসে বসলো, দুইজনে চা খাচ্ছিল।
রাহুলঃ আদনান, শোন, আমাদের দোকান চুরী হয়ে যাওয়াতে মন খারাপ, আর কতো বসে বসে খাবো কিছু একটা করা দরকার, দুইটা ভাই পড়াশুনাতে, তাদের পড়াশুনা খরচ ও বাড়ির দায়িত্ব বেড়ে গেছেরে। কিছু একটা করতে হবে!
আদনান মা বাবার একমাত্র সন্তান । রাহুলের সাথে পড়ে, বাবা গার্মেন্টসের একজন সিনিয়র এক্সিকিউটিভ । ভালো সেলারি পান, আলিশান বাড়ি-গাড়ি কোম্পানি হতে পায়। আদনানের কোন অভাব নেই, আদনান রাহুলকে বললো, তোর জন্য কিছু একটা করতেই হবে! তুই কি গার্মেন্টসে চাকরী করবি ? অবশ্য সম্ভবনা পড়াশুনা করে এসব কাজ করা ! যদি প্রয়োজন হয়, তাহলে আমি বাবাকে বলে ঠিক করতে পারবো।
দু’জনে কথা বলার ফাকে অরিন আর শ্রেয়া দূর হতে রাহুল ও আদনানকে দেখে এগিয়ে এলো ।
অরিন বললোঃ কেমন আছেন রাহুল ভাইয়া ?
রাহুলঃ আলহামদুলিল্লাহ ভালো ! আপনি এখানে হঠাৎ ?
- আমরা একটি দাওয়াত খেতে এসেছি রিনঝিন কমিউনিটি সেন্টারে, ঐ-তো পাশেই।
রাহুল অরিনের দিকে তাকিয়ে দেখল, আকাশী শাড়ির সাথে গোলাপী রঙের অন্তমিল ড্রেসে অসাধারণ লাগলো অরিনকে ! অল্প সময়ের জন্য দুঃখ ভুলে গিয়ে, মনে মনে নিজের অজান্তে অরিনের রুপের প্রশংসা করতে লাগলো!
দু’জন দু’জনের দিকে তাকিয়ে নির্বাক চেয়ে থাকলো। রাহুল ও অরিন কল্পনায় হারিয়ে গেল ভালবাসার দুষ্ট পাগলামীতে !
আদনান রাহুলকে চিমটি দিয়ে বললো,- কিরে বোবা হয়ে গেলি নাকি?
রাহুল ও অরিন দু’জনে একটু নড়ে চড়ে দাড়ালো।
অরিনঃ রাহুল ভাইয়া, আপনার নাম্বার দিন,প্লিজ !
রাহুল পাশের বাসার বাশারের নাম্বার দিলো। তারা চলে গেল, তারপর আদনান রাহুলকে বললো,- ভেতরে এতো এতো ! চালিয়ে যা মেয়েটি খুবই সুন্দর ও আকর্ষণীয়। যে কেউ প্রথম দেখাতে প্রেমে পড়ে যাবে !
রাহুলঃ ওসব আমি জানিনা রে ! তবে অরিনের আর্টস ও সৃজনশীল প্রতিভা, ভালো কাজগুলো আমার ভালোলাগে !
——————————————(….আসছে, আরো….)
- লেখকঃ দেলোয়ার হোসেন।