Tuesday, February 11, 2025
Galleryআরওভালোবাসার গল্প

ভালবাসার গল্প, মায়া !

পর্বঃ ১

একদিন রাহুল অফিসের উদ্দেশ্য তাড়াহুড়ো করে বাসা হতে বের হলেন। রাস্তায় গাড়ি কম চলছে কারণ লক ডাউনে পুরো দেশ, রাহুল দ্রুত হাটতে লাগলো আর গাড়ি আসতে দেখে হাত তুলতেই গাড়িটি থেমে গেলো। সেখান হতে একজন মোটা সোটা ইয়া বড় মানুষ বেরিয়ে এলো ।তিনি কিছু না বলেই হঠাৎ গায়ের সাথে ধাক্কা খেলো, এই দেখে রাহুল কিছু বলতে যাবে তখনি লোকটি বলতে লাগলো, স্যার আপনাকে অনেক জায়গায় খুঁজেছি কিন্তু কোথাও খুজে পাইনি। আপনার জিনিসপত্র গুলো অতি যত্নে সাথে সাথে নিয়ে ঘুরছি , এগুলো নিয়ে আমাকে উদ্ধার করুণ।

রাহুল বিস্মিত হয়ে তাকিয়ে থাকলেন লোকটির দিকে ,আর কিছু বলার আগেই একটি ডায়রি ও একটি হাত ব্যাগ দিয়ে লোকটি উদাও! রাহুল এদিক ঐদিক তাকিয়ে ইতস্ত করতে লাগলো।

এদিকে গাড়ি চলে যেতেই তিনি হাটতে লাগলেন অফিসের পথে। অফিসের কাছে এসে তিনি থমকে দাড়ালেন, দেখলেন একজন নোংরা কাপড় পরিহিত মহিলা ভেতরে প্রবেশ করতে চাইলো, আর আবুল তাকে ভেতরেই প্রবেশ করতে দিচ্ছে না।

রাহুল সাহেব দূর হতে বিষয়টি দেখলেন এবং কাছে গিয়ে জানতে চাইলেন এই মহিলা কি চায়, আবুল বলল স্যার দেখেনতো এই মহিলা নাকি আপনার সাথে দেহা করতে চায়। রাহুল বললো তাকে উপরে পাঠিয়ে দাও, বলে তিনি চেম্বারে গিয়ে বসলেন। আর হাতে করে নিয়ে আসা ডায়রী ও ব্যাগটির প্রতি বিষ্ময় আরো বেড়ে গেলো, কিন্তু প্রতিদিনের অভ্যাস মত একটি আপেল উনি খান তা টেবিলে রাখা তা তিনি দিব্বি ভুলে ডায়রি ও ব্যাগটির দিকে তাকিয়ে রইলেন। এমন সময় জীর্ণ মহিলাটি প্রবেশ করলেন, মাথায় ইয়া বড় ঘোমটা দেওয়া, ময়লা শাড়ি ব্লাউজ, থেকে বিষন দুর্গন্ধ বের হতে লাগলো।

তারপরেও তিনি তাড়াতাড়ি বিদায় করার জন্য বললেন, কি চাই তাড়াতাড়ি বলুন, অনেক কাজ আছে, তাড়াতাড়ি বলুন, এমন সময় মহিলাটি বলল, আমার ছেলের জন্য একটি চাকরী চাই, দয়া করুণ স্যার , তখন তিনি বললেন আপনার ছেলে পড়াশুনা কতদূর করেছে মার্স্টার্স , এই কথা শুনে তিনি বললেন ,এতোদূর পড়াশুনা সে নিজের চাকরী নিজেই ঠিক করতে পারে! আপনি এলেন কেনো? মহিলাটি দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলতে লাগলো, কত জায়গায় চাকরী খুঁজেছে কোথাও চাকরী পায়নি তার বাবা অসুস্থ হয়ে গৃহে পড়ে আছে অনেকদিন হলো, ঘরে একমুঠো চাওল নেই যে খাবে। মহিলাটির কন্ঠস্বর রাহুলের খুব পরিচিত ও পরিপাটি মনে হলো, আর মনে মনে বলতে লাগলেন এতো নোংরা কাপড় গন্ধে বুমি আসার উপক্রম অথচ ব্যবহারে একদম সাহেবা আচরণ! অতঃপর তিনি কিছু না ভেবে বললেন, আপনার ছেলেকে অফিসে পাঠিয়ে দিন, দেখি কি করতে পারি।
মহিলাটি খুশিতে চোখের জল মুছে চলে গেলো।

এদিকে রাহুল সাহেব মনে মনে বিষ্মিত হচ্চেন আজকের দিনটি কেমন জানি সবকিছু অগোছালো, রাহুল দুপুরের খাবার সেরেই বাসায় চলে আসলেন, এসে সর্বপ্রথম ডায়রীটি খুলে পড়তে লাগলেন। প্রথমে লেখা ” সেদিন এমন একজনের সাথে দেখা হলো যে আমার হৃদয়ে সমস্ত ভালোবাসা কেড়ে নিয়েছে ! – “অরিন “

——————

(আসছে…)

লেখকঃ দেলোয়ার হোসেন।