প্রেমের গল্প: হৃদয়ের বন্ধন -৪র্থ পর্ব
এক রৌদ্রোজ্জ্বল বিকেলে, সজীব এবং রুপা শহরের এক পুরনো পার্কে হাঁটছিল। পায়ের নিচে শুকনো পাতার মর্মর শব্দ, পাখির গান, আর হালকা বাতাস তাদের মুগ্ধ করে রাখে। তাদের মধ্যে কথোপকথনের ধারাও তখন যেন এক অন্যরকম সুরে বাঁধা।
রুপা সজীবকে বলল, “তুমি জানো, সজীব, আমি কখনও ভাবিনি যে বইয়ের দোকানে আমাদের প্রথম পরিচয়ের পর আমরা এত দ্রুত বন্ধু হয়ে যাব।”
সজীব হাসতে হাসতে বলল, “আমিও না, রুপা। তবে একসঙ্গে কাটানো সময়গুলো আমাকে বুঝিয়েছে যে, আমাদের মধ্যে একটা বিশেষ কিছু আছে।”
হঠাৎ, সজীব কৌতুক করে বলল, “তুমি কি আজকের দিনের জন্য প্রস্তুত? আমি কিন্তু একটা চমক রেখেছি।”
রুপা অবাক হয়ে বলল, “কী চমক? বলো না সজীব!”
সজীব রহস্যময় হাসি দিয়ে বলল, “তুমি অপেক্ষা করো, নিজেই দেখবে।”
তারা পার্কের এক কোণায় পৌঁছাল, যেখানে কিছুটা জল জমে ছিল। সজীব বলল, “এই তো আমাদের ফোয়ারা! এবার দেখো।” সে কিছু পাথর তুলে জলেতে ছুড়ে দিল। রুপা হাসতে শুরু করল, “এই ফোয়ারা! তুমি সত্যিই মজার।”
এই মজার মুহূর্তের মধ্যে হঠাৎ করে একটি বাচ্চা এসে তাদের দিকে তাকিয়ে বলল, “আপনারা কি দুজনেই পাগল?” সজীব ও রুপা হেসে বাচ্চাকে বলল, “হ্যাঁ, আমরা পাগল, একে অপরের জন্য।”
কিছুক্ষণ পর, তারা পার্কের এক বেঞ্চে বসে গল্প করতে লাগল। রুপা হঠাৎ করে বলল, “তুমি জানো, সজীব, আমি কখনও ভাবিনি যে এভাবে তোমার সাথে সময় কাটাতে এত মজা হবে।” সজীব তার চোখের দিকে তাকিয়ে বলল, “আমিও না, রুপা। তুমি আমার জীবনে এক নতুন রং এনেছো।”
একদিন, সজীব রুপাকে বলল, “চল, আজকে আমরা এক নতুন কাফেতে যাবো। সেখানে নাকি খুবই সুন্দর কবিতা পাঠের আসর হয়।” রুপা খুশি হয়ে বলল, “তাহলে দেরি না করে চলো।”
কাফেতে পৌঁছে, তারা মঞ্চের সামনের আসনে বসে পড়ল। কবিতা পাঠ শুরু হলে, তাদের দুজনেই মুগ্ধ হয়ে শুনতে লাগল। হঠাৎ, সজীব উঠে মঞ্চে চলে গেল। রুপা অবাক হয়ে দেখল, সজীব মাইক্রোফোন হাতে তুলে নিয়ে বলল, “আজকের কবিতাটি আমি রুপার জন্য উৎসর্গ করছি।”
সজীব একটি কবিতা পাঠ করতে শুরু করল, যেখানে তিনি রুপার সাথে কাটানো মুহূর্তগুলোকে তার কবিতায় ফুটিয়ে তুলল। রুপার চোখে জল এসে গেল, কিন্তু সেই জল ছিল আনন্দের। কবিতা শেষ হলে, সজীব মঞ্চ থেকে নেমে এসে রুপার দিকে হাত বাড়িয়ে দিল। রুপা তার হাত ধরে বলল, “তুমি জানো, সজীব, আমি কখনও ভাবিনি যে তোমার মধ্যে এমন একজন কবি লুকিয়ে আছে।”
সজীব হাসতে হাসতে বলল, “তোমার জন্যই তো, রুপা। তুমি আমাকে অনুপ্রাণিত করো।” তারা হাত ধরে কাফে থেকে বের হয়ে রাস্তায় হাঁটতে লাগল। রুপা সজীবকে বলল, “আমার মনে হয়, আমাদের বন্ধুত্বের গল্পটা সত্যিই রোমাঞ্চকর হয়ে উঠছে।”
সজীব মৃদু হেসে বলল, “হ্যাঁ, রুপা। এবং এই গল্পের প্রতিটি অধ্যায় আমরা একসাথে লিখব, হাসি-কান্না, মজা-মজার মুহূর্ত দিয়ে। এটা আমাদের জীবনের সবচেয়ে সুন্দর গল্প হয়ে থাকবে।”
এইভাবেই সজীব এবং রুপার সম্পর্কের নতুন অধ্যায় শুরু হয়। তাদের জীবনের প্রতিটি নতুন মুহূর্ত তাদের বন্ধুত্বকে আরও গভীর করে তোলে, এবং তারা বুঝতে পারে, একে অপরের সাথে সময় কাটানোই তাদের জীবনের সবচেয়ে সুন্দর উপহার।
আসছে আরো……..