প্রেমের গল্প: হৃদয়ের বন্ধন – ৫ম পর্ব
এক স্নিগ্ধ সন্ধ্যায়, যখন আকাশের রঙ মায়াবী কমলা ছুঁয়েছিল, সজীব আর রুপা নদীর পাড়ে হাঁটছিল। বাতাসে ছিল নদীর মিষ্টি গন্ধ, আর পাখিরা দিনের শেষ গান গাইছিল। তাদের চুপচাপ হাঁটতে দেখে মনে হচ্ছিল, কথারা তাদের সাথে আজ কোনো সখ্যতা গড়তে পারেনি। কিন্তু, সেই নীরবতায় লুকিয়ে ছিল হাজারো অনুভূতির ঢেউ।
এক সময় সজীব হঠাৎ থেমে গিয়ে রুপার দিকে তাকিয়ে বলল, “রুপা, তুমি কি জানো, এই নীরবতাও আমাদের এক নতুন ভাষায় কথা বলে? যেন আমরা হৃদয়ের গভীরে যা বলার, তা বলছি—শব্দ ছাড়াই।”
রুপা হেসে সজীবের দিকে তাকাল। “তুমি সবসময়ই এমন কিছু বলো যা ভাবনার বাইরে। কিন্তু হ্যাঁ, আমি বুঝতে পারি। এই নীরবতা আমাকে তোমার খুব কাছাকাছি নিয়ে আসে।”
তারা নদীর ধারে বসে পড়ল, জলের নরম ছলছল শব্দে মন মেলে। কিছুক্ষণ পর রুপা ধীরে ধীরে বলল, “সজীব, তুমি কি কখনো ভেবেছো, এই সম্পর্কটা কোথায় যাচ্ছে? আমরা দুজনেই কি শুধু বন্ধু থাকবো, নাকি এর চেয়েও বড় কিছু?”
সজীবের মুখে একটি নরম হাসি ফুটে উঠল, কিন্তু তার চোখে ছিল গভীরতার ছাপ। “রুপা, আমি কখনো এমন কিছু ভাবিনি, কারণ আমি বিশ্বাস করি, যেখানেই আমাদের গল্প নিয়ে যাবে, তা আমাদের হৃদয় ঠিক বুঝবে। আর আমি এখন জানি, তুমি আমার জীবনে এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে গেছো।”
রুপা কিছুক্ষণ চুপচাপ তাকিয়ে থাকল, যেন নদীর জল, সূর্যাস্ত আর সজীবের কথা তাকে গভীর কোনো অনুভূতির দিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে। তারপর হঠাৎ সে বলল, “তাহলে কি আমরা বন্ধুর গণ্ডি পেরিয়ে নতুন কিছু শুরু করতে যাচ্ছি?”
সজীবের হাত ধীরে ধীরে রুপার হাতের দিকে এগিয়ে এল। “হয়তো… হয়তো আমরা সেই গল্পটা লিখতে যাচ্ছি, যা হৃদয় দিয়ে লেখা হয়, যা সময়ের গণ্ডি পেরিয়ে থেকে যায়।”
এমন মুহূর্তে যেন বাতাসও থমকে দাঁড়ায়। সূর্যও তাদের সাক্ষী হয়ে নীরবে বিদায় নেয়। রুপা একটু হেসে সজীবের হাত ধরল। “আমি সেই গল্পটা তোমার সাথে লিখতে প্রস্তুত।”
তাদের সামনে নদী ছিল—নিরব, কিন্তু স্রোতে ভরা। সেই নদীর মতোই, তাদের জীবনের গল্প এগিয়ে চলবে, খরস্রোত কিংবা শান্ত—সব সময় একে অপরের পাশে থেকে, ভালোবাসার এক নতুন অধ্যায়ে প্রবেশ করবে।