ভালবাসার গল্প, মায়া ! পর্ব-৪
মায়া, পর্ব-৪
রহমত আলী আজ ধান উঠানোর জন্য মাঠে যাবে তাই রাহুলকে দোকানে বসালেন।
রাহুল দোকানে বসে দোকানদারী করতে লাগলো, একটি পাগল তার দোকানে এসে কিছু খেতে চাইলো, রাহুল তাকে কিছু খাবার দিয়ে বললো, খাও । পাগলটি সব খাবার তৃপ্তীর সাথে খেয়ে রাহুলকে বললো, ধন্যবাদ আল্লাহ আপনার মঙ্গল করবো। পাগলটি চলে গেলো।
রহমত আলী দুটো নাগাদ দোকানে এলো সাথে রাহুলের জন্য খাবার নিয়ে এলো। রাহুল হাত পা ধৌত করে ভাত খেতে বসলো এমন সময় সকালের পাগলটি আবার কাছে এসে ভাত খেতে চাইলো, রাহুলের মায়া লেগে গেলো, তাকে খেতে দিলো। পাগলটি তৃপ্তির সাথে খেয়ে বললো, আপনাদের দোকান লুট করার জন্য একদল চোর প্লান করছে, সাবধানে থাকবেন ।
রাহুল এই কথা শুনার পর চিন্তিত হয়ে পড়ল, আর মনে মনে স্রষ্টার কাছে প্রার্থনা ও শুকরিয়া করছেন, ওহে দয়াময় রক্ষা করো সকলকে, আর রক্ষা করো অভাবী সংসারেরে এই দোকানকে । আল্লাহ তুমি অসীম দয়ালু, একজন আল্লাহ ওয়ালা পাগলের মাধ্যমে সতর্ক করলে!
রাহুল আজ এশার নামাজ পড়ে একটি বই পড়তে বসলেন, বইটির নাম “বেহেশতের জেওরত “বইটি পড়ে রাহুলের নামাজ পড়ার প্রতি আগ্রহ বেড়ে যায়। রাহুল বিভিন্ন বই পড়েন এবং নিজস্ব শখের বইপত্রগুলো বুক সেল্পে সাজিয়ে রাখেন।
এদিকে অরিন সুন্দর করে সেজেগুজে বসে আছে আজ বাবা মায়ের বিবাহ বার্ষিকী । আজ সকলের তাড়াতাড়ি বাসায় ফিরার কথা, শুভ এলো তবে মা বাবা এখনো ফিরেনি ।
তাই অরিনের মন খারাপ ! শুভ আসাতে একটু ভালোই হলো, কেক ও খাসির রেজলা ,গরুর কোপতা, বাবার শখের ইলসে ভাজা ও ফালুদা করা হয়েছে ,মায়ের শখের খাবার মুগলাই ও চিকেন কাবাব ও আলুর চচ্চরী সবই রান্না হলো।
এখন রাত এগারোটা বাবা মায়ের আসার নাম নাই, আজ কেনো জানি আগের উচ্ছ্বাস হারিয়ে ফেলেছে। গান ,ফান মাস্তিতে মেতে থাকার কথা, গত দিনগুলোতে সকলেই এসেছিলো । এবার কাউকেই জানায়নি, অরিনের মন অন্য কোন কারণে খারাপ ছিলো, তাই হয়ত।
এদিকে শুভ গিটার দিয়ে একটি গান গাচ্ছিলো, এরকম –
মনের ঘরে আসা যাওয়া
মনের কথাগুলো,
মন শহরের গোলাপগুলি ফুটি যে রইলো।
মন ইচ্ছেরা দৌড়ে পালায়
আনকোরা বাউন্ডুলে,
মন খারাপেরা নেই আজ সাথে আওলাঝাউলা চুলে,
মনের সাথে চলে যুদ্ধ
হয়ে যাই অগোছালো।।
এই ফিরে আসা সময়ে
মন ছুটেছে অচেনা কোন তেফান্তরে,
এই নীলাদ্রি আকাশ নীলে
হারাই বারেবারে,
এই স্বপ্নের অপার হাসে কাঁদে এক করে।।
———
(আসছে, আরো……)
- লেখকঃ দেলোয়ার হোসেন